আজ “শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা” বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন।


জয় বাংলা নিউজ প্রকাশের সময় : ০৯/১০/২০২২, ৩:২২ PM / ১৯
আজ “শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা” বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন।

সুজন কুমার তঞ্চঙ্গ্যা,রাঙ্গামাটি।

সারাবিশ্বের ন্যায় রাঙ্গামাটি পার্বত্য এলাকার বিহারগুলোতেও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন করা হয়েছে। এটি আশ্বিনী পূর্ণিমা নামেও পরিচিত। তাই প্রবারণা পূর্ণিমাকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় অনুষ্ঠান বলা হয় এবং এই পূর্ণিমা একটি উৎসব ও মিলন মেলায় পরিণত হয়।

এই দিনে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিন।প্রায় জেলা ও উপজেলায় ৮০০ টিরও বেশি বৌদ্ধ বিহারে প্রবারণা পূর্ণিমা উৎযাপন করা হয়েছে বলে জানা গেছে । বিহারগুলো মধ্যে অন্যতম হচ্ছে -রাজবনবিহার,চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার, আনন্দ বিহার ও ধ্যান ভান্তের বিহার। এছাড়াও উপজেলা,ইউনিয়ন পর্যায়ে সব-কটি বৌদ্ধ বিহার।

উল্লেখ্য যে, প্রবারণা শব্দের আভিধানিক অর্থ – বর্ষাবাস পরিসমাপ্তি, অনুরোধ, মিনতি, বর্ষাবাস ত্যাগ, আসার তৃপ্তি ইত্যাদি ইত্যাদি । বৌদ্ধদের মতে, গৌতম বুদ্ধ এই প্রবারণা তিথিতে ভারতে সাংকাশ্য নগরে অবতরণ করেন এবং তাবতিংস স্বর্গে মাতৃদেবীকে অভিধর্ম দেশনার পর, তারপরে তিনি মানব জাতি কল্যাণ ও সুখ -শান্তি জন্য বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ধর্ম প্রচারের জন্য নির্দেশ দেন। এই দিনে গৌতম বৌদ্ধ ৩ মাস বর্ষাবাস শেষ করেন।

কথিত আছে- এইদিনে গৌতম বুদ্ধ ৬০ জন শিষ্যকে ধর্ম প্রচারের জন্য বিভিন্ন জায়গায় প্রেরণ করেন।”চরত্থু ভিকখবে চারিকং বহুজন হিতায় বহুজন সুখায় ” এই কথাটি গৌতম বুদ্ধ তার শিষ্যদের বলেছিলেন। অর্থাৎ- তোমরা বহুজনের হিতের জন্য কল্যাণের জন্য চারিদিকে ছড়িয়ে পড়।

তাই প্রতি বছর আশ্বিন মাসে পূর্ণিমা তিথিতে এই প্রবারণা পূর্ণিমা মহা উৎসব হয়ে থাকে। এইদিনে বর্ষাবাস শেষে বৌদ্ধদের সকল ভিক্ষুগণ একত্রিত হয়ে তাদের দোষত্রুটি একসাথে প্রকাশিত এবং তারা প্রায়চিত্তের জন্য আহ্বান জানায়। তাই এই বছরে ৯ ই অক্টোবর হতে শুরু হয়ে ১০ অক্টোবর বাংলা আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথি পর্যন্ত উৎসবটি শুরু হতে থাকবে। তাই এইদিনে সকল বৌদ্ধরা প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করে থাকেন।

এইসময়ে বৌদ্ধরা সুখ- সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনায় বিহারে বিহারে গিয়ে নানাবিধ দান, পঞ্চশীল, বুদ্ধপূজা,সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান,বুদ্ধমূর্তিদান,অন্নদান, পিণ্ড দান,,ফানুস উত্তোলন,হাজার বাতি, আগর ও মোমবাতি প্রজ্জলন, বয়োজ্যেষ্ঠদের শ্রদ্ধা- সন্মান আর ছোটদের স্নেহ- আদর দেওয়া এবং ঘরে ঘরে আপ্যায়ন সহ নানাবিধ ধর্মীয় অনুষ্ঠান করে থাকেন। এর পরে প্রবারণা পূর্ণিমার মধ্যে দিয়ে শুরু হয় বিহারে বিহারে ১ মাস ব্যাপী বৌদ্ধদের শ্রেষ্ঠদান দানোৎতম মহান কঠিন চীবর দানোৎসব।

তাই সত্য ও সুন্দরকে বরণ করার উৎসব হলো প্রবারণা পূর্ণিমা।

 

 

বান্দরবানে ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ (প্রবারনা পূর্নিমা) শুভ সূচনা করলেন পার্বত্য মন্ত্রী।