করোনা লক-ডাউন অত:পর শিক্ষার স্থবিরতা


জয় বাংলা নিউজ প্রকাশের সময় : ৩১/০৭/২০২১, ৭:১৮ PM / ১৪১
করোনা লক-ডাউন অত:পর শিক্ষার স্থবিরতা

২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে করোনা ভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমন রোধে সারাদেশ ব্যাপি লক- লক-ডাউন ঘোষনা করেন সরকার । করোনা ভাইরাস যেহেতু ছোঁয়াছে রোগ, তাই সরকার জরুরি ভিত্তিতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন ।

এহেন পরিস্থিতিতে , দেশের সকল স্কুল , কলেজ , মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষনা করা হয় । সেই থেকে আজ অবধি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। যদিও করোনা কালে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন , তবে তা কতটুকু ফলপ্রসূ তা বিবেচ্য বিষয়। শহর অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীরা উক্ত অন-লাইন ক্লাস করার জন্য সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা পায় কিন্তু গ্রাম বা প্রত্যন্ত অঞ্চলের ছাত্র-ছাত্রীরা সেই সুযোগ থেবে বঞ্চিত। পারিবারিক অস্বচ্ছলতা, উন্নত প্রযুক্তি যথা মোবাইল, আইপ্যাড , ল্যাপটপে ব্যবহারের সুযোগ না থাকায় ,অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীরা অন-লাইন ক্লাস করার সুযোগ পাচ্ছে না । তাছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেটওয়ার্ক ধীরগতি সম্পন্ন । যা অনলাইন শিক্ষা প্রসারে বাধাগ্রস্ত হয়ে দাঁড়ায়।

গ্রামের অধিকাংশ পরিবারই শিক্ষা সচেতন নয়। যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলমুখী করার জন্য সরকার খাদ্যের বিনিময়ে শিক্ষার কর্মসূচী , মেয়েদের উপবৃত্তি সহ নানাবিধ পদক্ষেপ নেওয়ার পরে ও শতভাগ স্কুলে উপস্থিতি নিশ্চিত সম্ভব হয় নি , সেখানে অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার প্রচার প্রসার অতটা সম্ভব নয়। এর ফলশ্রুতিতে শিক্ষা অবকাঠামো ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন।

প্রাথমিক স্কুলের শিশুরা জ্ঞানের আলো থেকে প্রায় দেড় বছর বঞ্চিত । ছোট ছোট কোমলমতি শিশুরা যেখানে স্কুলে যা্ওয়া –আসা , ক্লাস করা, শিক্ষা সমাবেশ সহ স্কুলের নানা পাঠ পরিকল্পনার মাধ্যমে শৃঙাখলা , আদব-কায়দা , সময় সচেতনতা , নিয়মানুবর্তিতা সহ শিক্ষার পরিবেশ থেকে জ্ঞান –বুদ্ধির বিকাশ হতো, সেই পরিবেশ না পাওয়ার দরুন শিশুদের মনসতাত্বিক মেধা বিকাশে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শিশুরা গৃহবন্দি থাকাতে পড়ালেখার প্রতি অমনোযোগীতা, খেলাধূলার প্রতি তীব্র নেশা, শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন যাপনের ঘাটতি, খাওয়া-দাওয়া, সঠিক সময়ে না ঘুমানো, মোবাইল গেম, টিভি দেখার প্রতি আসক্তি বেড়ে যা্ওয়া সহ নানাবিধ কু-অভ্যাস বেড়েই চলেছে। অভিভাবকদের মধ্যেও সন্তানদের পাঠদানে অনিহার প্রবণতা বেড়ে গেছে। ভালো গৃহশিক্ষকের অপ্রতুলতার কারনে লকডাউনে শিক্ষা ব্যবস্থা সর্ম্পূনভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে।

লেখক: ঈশিতা বড়ুয়া, কলামিষ্ট।