নির্বাচনী উৎসবের রং চট্টগ্রামে, বাড়ছে শঙ্কাও


জয় বাংলা নিউজ প্রকাশের সময় : ১৩/০১/২০২১, ৫:৫৯ PM / ১৩
নির্বাচনী উৎসবের রং চট্টগ্রামে, বাড়ছে শঙ্কাও

চট্টগ্রাম: নগরে ভোটের হাওয়ায় উৎসবের রং লেগেছে। লাখো পোস্টার, হাজারো ব্যানার, মাইকিং, গণসংযোগ, মিছিল, নির্বাচনী অফিস বা ক্যাম্প নজর কাড়ছে বেশ।

সরেজমিন দেখা গেছে, মেয়র পদে প্রধান দুই প্রার্থী আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেনের পোস্টারে ছেয়ে গেছে নগরের অলিগলি থেকে রাজপথ।

পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়ার্ড এলাকায় সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের (নারী) কাউন্সিলর প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানারও ঝোলানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। জনসমাগম বেশি হয়, ভোটকেন্দ্র আছে এমন এলাকা, বাজার, মার্কেট, গলির মুখ থেকে শুরু করে সড়কদ্বীপ, সড়ক বিভাজকে (ডিভাইডার) পোস্টার ঝোলানো হচ্ছে বেশি।

শহীদ সাইফুদ্দিন খালেদ সড়কে মধ্যরাতে বিএনপির মেয়র প্রার্থীর পোস্টার ঝোলানোর কাজ করছিলেন তিন তরুণ। তাদেরই একজন নাজমুল হাসান বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর একটি পোস্টার ঝোলানোর জন্য মজুরি দেওয়া হচ্ছে ৩-৪ টাকা। কিন্তু আমরা নিজেরাই কাজটি করছি দলের জন্য।

পোস্টারবিহীন নির্বাচন

পোস্টার ছাপানো ও ঝোলানোর প্রতিযোগিতার মধ্যে ব্যতিক্রমও আছে। ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী শৈবাল দাশ সুমন। পরিবেশ সুরক্ষা, অপচয় রোধ করে কল্যাণমুখী চিন্তা থেকে পোস্টারবিহীন নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

শৈবাল দাশ সুমন বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন কমিশন পোস্টার ছাপানোর খাতে যে টাকা অনুমোদন দিয়েছেন তা আমার নির্বাচনী এলাকার ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের হাতে তুলে দেব। আমার বিশ্বাস জামালখানে বিগত ৫ বছরে যে উন্নয়নকাজ, আধুনিকায়ন হয়েছে তার ধারাবাহিকতা রক্ষায় ভোটাররা চিন্তাভাবনা করে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

ডিজিটাল প্রচারণা

ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ কাজে লাগিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিজ্ঞাপন, লাইভ, ছবি পোস্ট করে ডিজিটাল প্রচারণাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন অনেক প্রার্থী। গণসংযোগের সময় নিয়মিত ফেসবুক পেইজে লাইভ দিচ্ছেন প্রার্থীরা। বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন তরুণ ভোটাররা।

সুষ্ঠু নির্বাচন চান সবাই

সাধারণ ভোটাররা চান অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন। সেই লক্ষ্যে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা। তারপরও প্রার্থীদের অভিযোগ আচরণবিধি লংঘনের। তুচ্ছ ঘটনাকে ঘিরে মঙ্গলবার প্রাণ হারালেন একজন। এতে শঙ্কা জাগছে নগরবাসীর মনে।

কাজীর দেউড়ি মোড়ে কথা হয় ষাটোর্ধ্ব এয়াসিন আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, করোনার জন্য ৬ মাস পিছিয়েছে চসিক নির্বাচন। ইতিমধ্যে অনেককে হারিয়েছি। নির্বাচনের জন্য কেন মানুষ মরবে, মায়ের বুক খালি হবে! মূলত কাউন্সিলর প্রার্থী যে ওয়ার্ডে বেশি সেখানেই শঙ্কা বেশি। তাই নির্বাচন কমিশনকে কঠোর হতে হবে।

আগামী ২৭ জানুয়ারি চসিক নির্বাচনে ৭ জন মেয়র প্রার্থীসহ মোট ২৩৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটগ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। ৪১টি ওয়ার্ডে ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এদের মধ্যে নারী ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন এবং পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন।