বান্দরবান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অবস্থান,জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের প্রেস ব্রিফিং।


জয় বাংলা নিউজ প্রকাশের সময় : ২০/০৯/২০২২, ৪:৩৯ PM / ১৯
বান্দরবান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অবস্থান,জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের প্রেস ব্রিফিং।

মোঃ শহীদুল ইসলাম,বান্দরবান।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা বলেছেন, সম্প্রতি সময়ে কাজের উদ্দেশ্যে বান্দরবান বাইরে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ পৌর মেয়র আমাকে জানালো, শহরে উজানী পাড়া বান্দরবান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একদল সশস্ত্র গ্রুপ অবস্থান করছে। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক আনইশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করি।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে কোন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ একদম লোকালয়ের ভিতরে দাপিয়ে বেড়ানো, তাছাড়া শহরের ভিতরে প্রাইমারী স্কুলের এসে অবস্থান করার ঘটনা অতি  ন্যাক্কার জনক ও ভয়ংকর।

অপ্রীতিকর দুর্ঘটনা এড়াতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আরো সজাগ থাকার প্রয়োজন ছিলো।
এক প্রশ্নের জবাবে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, নামে-বেনামে দিনদিন বান্দরবানে সন্ত্রাসী বাড়ছে। এই গ্রুপগুলি বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে।

এলাকার বিভিন্ন জন থেকে চাঁবাবাজি, হুমকি, ভয়ভীতির কারণে বিব্রতকর পরিবেশের সম্মুখীন হচ্ছেন এলাকার সাধারণ লোকজন,এদের থেকে পরিত্রাণ চায় সাধারণ মানুষ।

তিনি আরো বলেন আমাকে  হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে সাবেক রোয়াংছড়ি উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান  জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) দলের সিনিয়র একজন নেতা, তার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, আমি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান না-কি, মগ লিবারেশন আর্মি (মগ পার্টি) সশস্ত্র গ্রুপের আহারের (ভাত) ব্যবস্থা করে দিয়েছি।  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার এ ধরনের বক্তব্য আমার ব্যক্তিগত ইমেজ ও পরিবারিক সুনামকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বনোয়াট ও গুজবই রটানো ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না।

তিনি এও বলেন, আমি তাদের (মগ বাহিনী) সাথে সস্পৃক্ততা থাকলে কেনই-বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি  অবহিত করেছি। তাই এই শহরকে নিরাপত্তা রাখতে আর ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তি না হয়, সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ও সংশ্লিষ্ট প্রসাশনের হস্তক্ষেপ চান।

২০শে সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।

১৮ই সেপ্টেম্বর বিকেলে সেদিনের সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বান্দরবান পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তিংম্যাইয় বলেন বঙ্গবন্ধু ফুটবল টুর্নামেন্ট চলাকালিন আমি মাঠে ছিলাম, বিদ্যালয়ের এসএমসি কমিটির সদস্য আমার মোবাইলে ফোন করে,ফোন রিসিব না করায় স্কুলের ক্লিনারের মোবাইল থেকে আমার মোবাইলে কল করা হয়।টুর্নামেন্ট এর আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বাইরে বের হয়ে এলাকার ঐ অভিবাবক কে ফোন করি,উনি ফোনে জানান স্কুলে কিছু লোক এসছে,তারা কারা এটা জিজ্ঞেস করাতে উনি জানান ওরা সশস্ত্র অস্ত্র ধারী , (মারমা ফুয়ে)মগ লিবারেশন পার্টি, তারা আজকে রাত স্কুলে থাকবে বলছে,এটা শোনার পর আমি টিও স্যার ও বিদ্যালয় এসএমসি কমিটির সদস্য ও একজন সিনিয়র শিক্ষকের সাথে আলাপ করে,আনুমানিক বিকেল চারটায় স্কুলে যাই,স্কুলের ক্লিনার ততক্ষণে স্কুল থেকে পালিয়ে যায়,পরে সিনিয়র শিক্ষক ঐ ক্লিনারকে ডেকে আমরা  স্কুলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করি।

ঢোকার পর দেখলাম ৪-৫ জন সশস্ত্র যুবক চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে আছে,তাদের অনেকেই সিভিল পোশাকে এবং কয়েকজন পাতা কালারের ড্রেস পরা ছিল,আমি সোজা অফিসের দিকে যাওয়ার পর তাদের একজন আমার পিছু পিছু অফিসে আসে,সে বলে আমরা মগ লিবারেশন  পার্টির সদস্য,ম্যাডাম আপনি ভয় পাবেন না আমরা আপনার সাথে কথা বলব,আমরা কিছুক্ষণের জন্য স্কুলে বিশ্রাম নিবো,ততক্ষণে তাদের অনেক কয়েকজন সদস্য স্কুলের দ্বিতীয় তলায় অবস্থান নেয়।

ঘটনার পর ডিপিও স্যার ফোন দেয়া তে আমি স্কুলের অফিস কক্ষ বন্ধ করে আমার সহকারী শিক্ষক এবং পিয়ন কে নিয়ে আবার পুনরায় স্টেডিয়ামে ফিরে যাই।ঘটনায় হতভম্ব হওয়ার কারণে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দায়ের করিনি।তবে এ বিষয়ে আমার  ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেছি।

শহরের প্রাণকেন্দ্রে এ ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম পিপিএম জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, কিছু সশস্ত্র গ্রুপ বান্দরবান  পাড়া সরকারি  প্রাথমিক স্কুলে অবস্থান করছে।এমন সংবাদের ভিত্তিতে সাদা পোশাকধারী পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগের সদস্যরা এলাকার চারপাশে অবস্থান নেয়,তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায় নি।এ ঘটনায় থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ না দিলেও  আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

অজিত তালুকদার কাপ্তাইয়ের শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এস এম সির সভাপতি নির্বাচিত।