লামায় নাগরিক পরিষদের সমাবেশ।


জয় বাংলা নিউজ প্রকাশের সময় : ১৫/০৯/২০২২, ১:২৫ PM /
লামায় নাগরিক পরিষদের সমাবেশ।

জাহিদ হাসান,লামা।

লামা উপজেলার শিল্প নগরী আজিজনগরে এক পথ সভায় পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মোঃ মুজিবুর রহমান বলেছেন, পাহাড়ে বস্তুগত যতেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে। এখন প্রয়োজন মানব সম্পদের উন্নয়ন করা। তিঁনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী উপজাতি বাংলা ভাষা-ভাষী বাঙ্গালীদের হাজার বছরের সহাবস্থান, বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করে শান্তি ও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যহত রাখার জন্য সকল অবৈধ অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোকে আইনের আওতায় আনতে হবে। পিসিএনপি লামা উপজেলা শাখার আয়োজনে ১৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে আজিজনগর চাম্বী মফিজ বাজার তিন রাস্তার মোড়ে অনুষ্ঠিত পথসভায় শত শত মানুষ নেতা মুজিবের দীর্ঘ বক্তব্য শ্রবণ করেন। এ সময় তিনি পার্বত্য বাঙ্গালীদের নানান বঞ্ছনার কথা তুলে ধরে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে বেশ কিছু দাবি উত্থাপন করেন। দাবি সমুহের মধ্যে রয়েছ, পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৭৫ কি.মি আন্তর্জাতিক সীমান্তে সড়ক উন্নয়নসহ নিরাপত্তা জোরদার করা। অস্থায়ী সেনাক্যাম্পে পুনরায় সেনাবাহিনী পুন: মোতায়েন করা। পাহাড়ে নতুন নতুন সেনা ক্যাম্প, বিজিবি ক্যাম্প, পুলিশ ক্যাম্প, এপিবিএন এর ক্যাম্প স্থাপন করা। পুলিশ বাহীনিকে ক্ষমতায়ন, হেলিকপ্টারসহ ট্রান্সপোর্টেশন ব্যবস্থা। পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন দপ্তরে সেনা কর্মকর্তা নিয়োগ করা। জেলা পরিষদ, আঞ্চলিক পরিষদ, টাস্কফোর্স, উন্নয়ন বোর্ড, এমপি, রাজা, হেডম্যান, কার্বারী; এ সকল পদে বাঙ্গালীদের কর্তৃত্ব স্থাপন করা। নৌকা প্রতীকে বাঙ্গালীরা ভোট দেয় ৮০% চাকুরীর বেলায় ১০% ও নাই। শিক্ষা,চাকুরী কোটা, ব্যবসায় সুযোগ, বাঙ্গালী ছাত্রদের জন্য হোস্টেল প্রতিষ্টা করা। মানব সম্পদের উন্নয়নে মিল কারখানা স্থাপন, চাকুরীতে, ব্যবসায় শিক্ষায় বাসিন্দাদের সমান সুযোগ দেয়া। আইন সংস্কার করে যথা- ভূমি কমিশন, পার্বত্য চুক্তি, টাস্কফোর্স, ১৯০০ সালের পার্বত্য শাসনবিধি, রাজার সনদ ব্যবস্থা বাতিল করা। বাজার ফান্ডের লোনের ব্যবস্থা করন। সিএইচটি কমিশনের সুলতানা কামালদের বান্দরবান আগমন বন্ধ করা, লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রির বিরুদ্ধে জেএসএস ও পিসিপি’র ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা ইস্যু বানিয়ে মানববন্ধনকারীদের আইনের আওতায় আনা। পার্বত্য অঞ্চলকে পর্যটন ও রাবার শিল্পের অর্থনৈতিক জোন হিসেবে ঘোষণা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সিএইচটি কমিশনের সকল কার্যক্রম অবৈধ ঘোষণা ও পার্বত্য এলাকার সকল এনজিও সংস্থা সমূহের বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িক কর্মকান্ড বন্ধ করা। পার্বত্য জেলা ও উপজেলা সমূহের আইন শৃঙ্খলা কমিটিসহ বিভিন্ন সরকারী কমিটিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সভাপতি/ সাধারণ সম্পাদককে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা। সরকারী চাকুরী, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি, উপবৃত্তি ইত্যাদির ক্ষেত্রে উপজাতি কোটার পরিবর্তে পার্বত্য কোটা চালু করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বাঙালীদের জন্য সমহারে কোটা নির্ধারণ ও দ্বিগুন করা। সকল জেলা-উপজেলায় বাঙ্গালী ছাত্রাবাস নির্মাণ করা। তিন জেলায় পর্যাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা। পর্যটন শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্য বিকাশের স্বার্থে পার্বত্য এলাকায় বিমান বন্দর স্থাপন করা। সারা দেশের সাথে পার্বত্য অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য রেল যোগাযোগ স্থাপন করা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, আঞ্চলিক পরিষদ, টাস্কফোর্স, উন্নয়ন বোর্ড, জেলা পরিষদ, হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠান সমূহে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের নিয়োগ প্রদান করা। কাজী মুজিব আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান সমস্যা সমাধানে সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রামে দায়িত্বে নিয়োজিত নিরাপত্তা বাহিনীসহ সকল প্রশাসনকে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি প্রক্রিয়ায় সহায়তা, সমর্থন ও পরামর্শ দিয়ে চলমান সমস্যা সমাধানে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে সু-শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব অখন্ডতা, জনগণের জান-মাল ও সম্পদের নিরাপত্তার জন্যে সামরিক বাহিনীর একটি ডিভিশন, নতুন নতুন ব্রিগেড স্থাপন, দুর্গম ও সন্ত্রাস প্রবণ এলাকায় সেনা ক্যাম্প স্থাপন, পাহাড়ের চূড়ায় চূড়ায় হেলিপ্যাড ও সেনাক্যাম্প স্থাপন, বিজিবির সীমান্ত চৌকি স্থাপন, র‍্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনী সমূহের ০৩ টি করে ব্যাটালিয়ন স্থাপন ও জননিরাপত্তা জোড়দার করতে হবে, ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ অনেকগুলো উত্থাপন করেন। নেতা মুজিব বলেন, দূর্গম পার্বত্য জনপদে শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় “পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ” এর এই লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, প্রচার ও দাবী নিয়ে ঐক্যবদ্ধ জনতা সামনে এগিয়ে যাবে; ইনশাআল্লাহ। প্রসঙ্গক্রমে কাজী মুজিব ঘৃণা জানিয়ে আরো বলেন, যারা জনগনের সাথে নাই, তাদের কারণে আজ বীর বাহাদুর অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তিল তিল গড়ে উঠা বীর বাহাদুরের বিশাল অবস্থান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, হচ্ছে দুই-একজন জনপ্রতিনিধির কারণে। তারা জনগনের সাথে নাই, আওয়ামীলীগের দূর্দিনের নেতা কর্মীরাও তাদের সাথে নাই। এরা শুধু মন্ত্রীর সাথে একবার বসতে পারলেই ফেইসবুকে ছবি পোস্ট দিয়ে সবকিছু জায়েজ করে নেয়। বীর বাহাদুরের উদারতার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে কাজী মুজিব বলেন, বীর বাহাদুর এক বক্তব্যে বলেছিলেন “একজন বাঙ্গালী যেতে হলে সবার আগে আমি যাবো। বান্দরবানে কোন সেটেলার নাই”। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, পিসিএনপি বান্দরবান জেলা কমিটির সভাপতি আলীকদম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিল টাইগার মোঃ আবুল কালাম। জেলা সেক্রেটারী মোঃ নাসির উদ্দীন, এম রুহুল আমিন, মোঃ মিজানুর রহমান আকন্দ, শাহ জালাল, কামাল উদ্দিন, নুরুল আবসার,কামরুজ্জামানসহ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন ।

 

 

বিএনপির আন্দোলনের নেতা কে? – ওবাইদুল কাদের।