নিজস্ব সংবাদদাতা।
বান্দরবানের রেনিং পাড়ায় দীর্ঘ ১৫ বছর পর মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী লোকনাট্য পাংখুং “মাহা জানাখা” মঞ্চায়ন করা হয়েছে।
শনিবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে বান্দরবান সদর উপজেলা রাজবিলা ইউনিয়নে রেনিং পাড়ায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এবং বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের(কেএসআই) ব্যবস্থাপনায় এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এ-উপলক্ষ্যে দুপুর থেকে পাংখুং “মাহা জানাখা” মঞ্চায়ন, লোকসাংস্কৃতিক নাচ ও গানের অনুষ্টান শেষে তিন মাস ব্যাপী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদেরকে নগদ অর্থ, সার্টিফিকেট ও লোকনাট্য সরঞ্জাম প্রদান করা হয়।
সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বার্ষিক কার্যসম্পাদন চুক্তি (এসিএ)বাস্তবায়নের আওতায় আয়োজিত রাজবিলা ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ড দুর্গম এলাকা রেনি পাড়ায় এই অনুষ্টানে রাজবিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ক্য অং প্রু মারমা”র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট(কেএসআই) এর কনভেনার সিংইয়ং ম্রো, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব মোঃসুলতান মাহামুদ,কেএসআই পরিচালক মংনুচি, সহকারী পরিচালক লীলা মুরুং, প্রেসক্লাবের সভাপতি ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি”র সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বাচ্চু প্রমুখ।
অনুষ্টানে প্রধান অতিথি সিংইয়ং ম্রো বলেন বান্দরবান জেলায় ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতি, বিলুপ্তপ্রায় সংস্কৃতি পুনরুদ্ধারে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উদ্যােগ আসলেই প্রশংসনীয় বলে উল্লেখ করে বলেন সংস্কৃতির বিষয়ের সাথে যেগুলো জড়িত আছে, নাচ,গান,গল্প,কবিতা সবকিছুই আমাদের ঐতিহ্য সংস্কৃতি। আগে মারমা সম্প্রদায়ের পাংখুং,জাইক, কাপ্যা বিভিন্ন পাড়ায় রাতব্যাপী প্রদর্শন করা হতো এখন এগুলো বিলুপ্তির পথে। অথচ পাংখুং,জাইক লোক নাট্যে নাটক,গান,নৃত্য, সুন্দর একটা কাহিনীও আছে এটাকেই আমরা লোকনাট্য বলে থাকি। এটা মারমা ব্যতীত অন্যকোন জাতিগোষ্ঠীর কাছে নেই তাই এই লোক সংস্কৃতি অবশ্যই আমাদেরকে ধরে রাখতে হবে। এটা আমাদের পূর্বপুরুষদের কাহিনীগুলো যখন মঞ্চস্ত করা হয় তখন পূর্বপুরুষদের সাথে আমাদের নতুন মেলবন্ধন সংযোগ স্থাপন করা হয়।
এজন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মিলিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং পাংখুং,জাইক,কাপ্যা,রুপকথা এগুলো আমাদের শিখর এগুলো আমাদেরকে অবশ্যই ধরে রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
পাংখুং দলের সদস্য মংশৈ প্রু মারমা জানান তাদের পাংখুং দলে ৪৫ জন সদস্য আছেন, তার মধ্যে নারী সদস্য১৫জন । পনের বছর পর রেনিং পাড়ায় পাংখুং “মাহা জানাখা” মঞ্চস্ত হয়েছে বলে জানান তিনি।
অনুষ্টান শেষে পাংখুং দলের ৪৫জন সদস্যকে আর্থিক সহযোগীতা,দলের জন্য নাট্য সরঞ্জাম এবং পাংখুং দলের প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদেরকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয় এছাড়াও রেনিং পাড়া নাট্য সাংস্কৃতিক দলের জন্য পোশাক, বাদ্যযন্ত্র, সরঞ্জামসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেএসআই থেকে প্রদান করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :