৪কোটি টাকায় ব্যয়ে সাইড ওয়াল নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম।


জয় বাংলা নিউজ প্রকাশের সময় : ৩০/০৯/২০২২, ৮:৫৩ PM /
৪কোটি টাকায় ব্যয়ে সাইড ওয়াল নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম।

নিজস্ব সংবাদ দাতা।

বান্দরবানে বালাঘাটা-বাগমারা সড়কে যাওয়ার পথে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) আওতায় রাস্তা পাশে ৩ কিলোমিটার সাইড ওয়াল নির্মাণের ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চলতি বর্ষা মৌসুমে তড়িঘড়ি করে নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইট-খোয়া ও স্থানীয় নদীর বালু ব্যবহার করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ।

তাছাড়া ওই সড়কে পাশে সীমানা প্রাচীর করতে গিয়ে ঐ এলাকার স্থানীয়দের ব্যক্তি মালিকানাধীন কিছু ভোগ দখলীয় জায়গাও চলে গেছে। এতে কোন ক্ষতিপূরণ না পাওয়াতেই স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বান্দরবান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, গত ২০২১ অর্থবছরের ডিসেম্বরে টেন্ডারের মাধ্যমে প্রায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দে বালাঘাটা-বাঘমারা সড়কের পাশে সাড়ে ৩ কিলোমিটার সাইড ওয়াল নির্মাণের কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইউটিমং, কিন্তু অনুকুলে কাজটি বাস্তবায়ন করেন ঠিকাদার ফরহাদ।

সরেজমিন গিয়ে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানের যোগসাজস ও ঠিকাদারের ইচ্ছানুসারে রাস্তার পাশে সাইড ওয়াল গুলি নির্মাণ করে গেছে। তাছাড়া ওয়াল নির্মাণের কাজটি শুরু থেকে ইট,বালু সহ নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে।

এবং কিছু কিছু জায়গার পাশে কোন নালা-ড্রেন না থাকায় পাহাড়ের মাটি ধ্বসে পড়ে কাদা জমে ওয়ালটি ভরাট হয়ে কোন চিহৃ দেখা যাচ্ছে না। এতে করে কাজের স্বচ্ছতা, স্থায়ীত্ব ও গুণগতমান নিয়ে প্রশ্ন তোলে স্থানীয়রা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ঠিকাদার জানান, কাজ বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার ফরহাদ বান্দরবান এলজিইডি’র সিনিয়র প্রকৌশলীর আস্থাভাজন হওয়ায় নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করলেও প্রতিষ্ঠান তার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেয়নি।

এতে দিনদিন সরকারি বিভিন্ন উন্নয়নের কাজে দুর্নীতি ও বেপরোয়া ভাবে কাজ চালিয়ে যেতে সাহস পাচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে ।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) জেলা দপ্তরে যোগাযোগ করে জানা গেছে, ২০২১ সালে কাজটির টেন্ডার হলেও সমস্যার কারণ দেখিয়ে তা পুনরায় (২য় বার) টেন্ডার আহ্বান করে এলজিইডি। কিন্তু ২য় বারের টেন্ডারেও কোনো ঠিকাদার অংশ না নেয়ায় পরের বছর ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ৩য় বারের মতো টেন্ডার আহ্বান করা হয়। তাও ৫ শতাংশ এভাব দেখিয়ে। ইউটিমং নামে একটি উপজাতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে পাওয়া কাজটি বর্তমানে চলমান থাকলেও কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইট ও বালু।

স্থানীয় বাসিন্দা ফয়েজ জানান, বৃষ্টির মধ্যে কাজ করার সময় আমরা শ্রমিকদের বাধা দিয়েছি। কিন্তু বাধা না শুনে দুই নম্বর ইট আর ঝিড়ির বালি ব্যবহার করা হচ্ছে কাজে।
ওই এলাকা ২নং ওর্য়াড বালাঘাটা মেম্বার কালাম বলেন, বর্ষা মৌসুমে কাজ চলমান থাকায়, কাজটি করতে গিয়ে মাটির স্তুপ গুলি সড়কের পাশে রাখার কারণে বৃষ্টি পানিতে মিশে কাদা জমিয়ে মানুষের চলাচল চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

তাছাড়া ঐ এলাকার কিছু মানুষের ঘর-বাড়ি জায়গা জোড় পূর্বক উন্নয়নের নামে কেড়ে নিয়েছে। এসব অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার হয় নি।এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বান্দরবান এলজিইডি’র সহকারী প্রকৌশলী ও সদর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয় সেন জানান, প্রথম বার ঠিকাদার নিম্নমানের ইট-বালু ব্যবহার করায় তাকে সতর্ক করা হয়েছিল। এবারেও যদি ঠিকাদার এ ধরনের কাজ করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

বর্তমান ঠিকাদার ফরহাদ জানান, ‘পাহাড়ি এলাকায় কাজ করতে হলে একটু সমস্যা-তো হয়,বৃষ্টিতে কাজ করার কারনেও সমস্যা সম্মুখীন হচ্ছি,বর্তমানে কাজটি আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে।নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারে স্থানীয়দের অভিযোগ প্রেক্ষিতে প্রশ্ন করার হলে,তিনি প্রতিবেদকের সাথে যোগাযোগ করবে বলে এড়িয়ে যান।

 

বান্দরবান এলজিইডি’র সিনিয়র প্রকৌশলী জামাল উদ্দিন জানান, আমার জানা মতে, কাজের মান ভালো হচ্ছে। আস্থাভাজন ঠিকাদারকে কাজ দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা ভুল ধারণা, কারণ সব ঠিকাদারকে সমান চোখে দেখি’। আর আপনারা জানেন, পাহাড়ে কাজ করা অনেক সমস্যা, তবে অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

 

 

বিলাইছড়িতে বীর মুক্তি যোদ্ধা প্রভাত কান্তি বড়ুয়া আর নেই।