বান্দরবানে সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির ট্রাক সেলিংয়ের শেষ দিনে উপছে পড়া ভিড়


জয় বাংলা নিউজ প্রকাশের সময় : ২৭/০২/২০২২, ২:১৯ PM / ১৪
বান্দরবানে সাশ্রয়ী মূল্যে টিসিবির ট্রাক সেলিংয়ের শেষ দিনে উপছে পড়া ভিড়

নিম্নআয়ের মানুষের জন্য আবারও সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য বিক্রি শুরু করছে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এরই ধারাবাহিকতায় বান্দরবানে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়  ট্রাকে করে টিসিবির পন্য বিক্রয় কার্যক্রম চলতে দেখা গেছে।দ্রব্য মূল্যের উর্ধগতির কারনে নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্য কিনতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্নআয়ের মানুষ,বাজার ঘুরে দেখা যায় টিসিবির সরবরাহ কৃত পন্যের মূল্যের সাথে খুচরা বাজারে একই পন্যের মূল্যের পার্থক্য ৫০-৭০ টাকা।

জেলা সদরে টিসিবির এই কার্যক্রম পরিচালনা হওয়ায় কিছুটা আশার মুখ দেখছেন নিম্ন আয়ের মানুষ,তবে  সরবরাহ কম হওয়ায় অনেকেই এর সুফলতা ভোগ করতে পারছে না এবং অনেকেই জানেন না এই ব্যাপারে।

সরজমিনে দেখা যায় খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চিনি ৭৮ টাকায়, মসুর ডাল ৯০ টাকা(মোটা), সয়াবিন তৈল প্রতি লিটার ১৬০-১৬৫ টাকায় এবং পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৪৫-৫৫ টাকায় বিক্রয় হয়।এ দফায় টিসিবির প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ভোক্তাপর্যায়ে কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আগে ৬০ টাকা ছিল।

টিসিবি সুত্রে জানাযায় দেশের সব মহানগর, জেলা ও উপজেলার ডিলার পয়েন্টে টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে পেঁয়াজ, মসুর ডাল, চিনি ও সয়াবিন তেল বিক্রি করা হবে। টিসিবির পন্যবাহী ট্রাক থেকে একজন ক্রেতা প্রতি কেজি চিনি ৫৫ টাকায়, মসুর ডাল ৬৫ টাকায়, সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১১০ টাকায় এবং পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩০ টাকায় কিনতে পারবেন।

বান্দরবান সদর উপজেলার টিসিবি ডিলার অনামিকা স্টোর প্রাথমিক ভাবে ট্রাকে করে সপ্তাহে ২ দিন সকাল ৮ হতে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত টিসিবির স্বল্পমূল্যের পন্য নিম্নআয়ের মানুষের কাছে পৌছে দেয়ার ব্যাবস্থা গ্রহন করছে ।

সরজমিনে দেখা যায় জেলা সদরের রেইছা বাজার ও বালাঘাটা এলাকায় টিসিবির পন্য সরবরাহ কারি ট্রাকের সামনে মানুষের লাইন থাকার পরেও খালি হাতে অনেককেই ফিরে যেতে দেখা গেছে।

ভুক্তভোগী অনেকেই নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগের সুরে বলেন ইচ্ছে করে তো লাইনে দাড়িয়ে পন্য কিনতে দাড়াই নি, বাজারে নিত্যপন্যের দ্রব্যের দাম লাগামহীন হওয়ায় সংসারের দুই পয়সা বাচানোর জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু মাল শেষ হয়ে যাওয়ার কারনে আজকে আর নিতে পারলাম না,খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে।

টিসিবির ডিলার অনামিকা স্টোর এর স্বত্বাধিকারী সাগর মিত্র প্রতিবেদককে জানান  চট্টগ্রাম টিসিবির কার্যালয় হতে আমাদের জন্য নির্ধারীত পন্য  মাসে ১-২ বার সরবরাহ করা হয়। তিনি বলেন জনসাধারণের চাহিদা থাকার পরেও আমরা সপ্তাহের বন্ধের দিন গুলো ছাড়া ৫ দিন ট্রাক সেইলিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারি না। পন্য সরবরাহ কম থাকায় সকলকে পন্য দেয়া অনেক সময় সম্ভব হচ্ছে না।আমরা এখন সপ্তাহে ২ দিন টিসিবির পন্য সদরের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে থাকি। তিনি বলেন উপজেলা নির্বাহী অফিস হতে এ ব্যাপারে আমাদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়ে থাকে,সপ্তাহে কোন কোন এলাকায় ভ্রাম্যমান ট্রাক যোগে টিসিবির পন্য সামগ্রি বিক্রয় করা হবে তা নির্দিষ্ট করা আছে। জেলা সদরের জনসংখ্যা অনুপাতে পন্য সরবরাহ কম তাই সবার কাছে টিসিবির পন্য সেবা পৌছে দেয়া সম্ভব হয় না, তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাদের আস্বস্ত করেছেন রমজান মাসে নিম্ন আয়ের জনসাধারণের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে পন্য সরবরাহ বাড়ানোর ব্যপারে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলায় টিসিবির পন্য সরবরাহ কম এবং আসন্ব রমজানে জেলার নিম্ন আয়ের মানুষের কথা বিবেচনা করে কোন সিদ্ধান্ত  গ্রহন করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা আফরিন মোস্তফা বলেন সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এবং সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর নিয়ম অনুযায়ী জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যে টিসিবির পন্য সরবরাহের ব্যাবস্থা গ্রহন করা হয়েছে,কোন জেলায় কি পরিমানের পন্য সরবরাহ করা হবে সে ব্যাপারে টিসিবির সুনির্দিষ্ট  নির্দেশনা আছে এবং সে ভাবেই তা মানা হচ্ছে।তিনি প্রতিবেদককে বলেন নিম্ন আয়ের জনসাধারণের চাহিদা অনুযায়ী পন্য না পাওয়ার বিষয়টি অবগত হয়েছি এবং এ ব্যাপারে আমার পক্ষ থেকে কোন সুপারিশের সুযোগ থাকলে অবশ্যই তা গ্রহন করা হবে।

এদিকে ২৬ শে ফেব্রুয়ারী শনিবার থেকে সারাদেশে ট্রাক সেইল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে টিসিবি সুত্রে,কয়েকটি জাতীয় পত্রিকার সুত্রেও তা উল্লেখ আছে।আগামী মার্চের ১০ তারিখের আগে পুনরায় ট্রাক সেইলিং কার্যক্রম চালু করার কথা জানানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট সুত্রে।